সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
Non Fiction; Prose
January 1, 1999
🪻 “……ম্যান ডাজ নট লিভ বাই ব্রেড অ্যালোন। শুধু ভাত রুটি খেয়ে বেঁচে থাকার কোনো অর্থ হয় না। কবিতাও পড়তে হবে। একটু কম ভাত খেয়ে, চায়ে একটু কম চিনি দিয়ে, সেই পয়সা বাঁচিয়ে একটা কবিতার বই অবশ্যই কেনা যেতে পারে।” 🪻
—বইটি ভালো লাগার জন্য মনে হয়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের এই স্বগোতোক্তি টুকুই যথেষ্ট।
🍁 ভাত-চিনি না কমালেও আমরা অনেকেই এই ঘটনার সঙ্গে নিজেদের কোনো না কোনো কানেকশন খুঁজে পাবো। 😁
🍂 বইটির শুরু হয়েছে শুদ্ধতম কবি জীবনানন্দকে নিয়ে। সুনীল বাবু জীবনানন্দের কবিতার খোঁজ পাওয়া থেকে শুরু করে তাঁর লেখার প্রেমে পড়ার অনুভূতি পর্যন্ত সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন আমাদের সামনে। ওনার কবিতার মাধুর্য, শব্দের নতুন নতুন অথচ যথোপযুক্ত ব্যবহার, প্রকৃতির ছোয়া, প্রেমের ছোয়া পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা করেছেন তিনি, যা পাঠককে আবিষ্ট করতে বাধ্য। ‘জ্যোৎস্নার শরীরের স্বাদ’, ‘মেধাবী নীলিমা’, ‘সোনার পিত্তল মূর্তি’, ‘মোরগ ফুলের মতো লাল আগুন’, ‘টিয়ার পালকের মতো সবুজ’ - এই যে শব্দগুলি, আদপে তিনিই প্রথম এইভাবে ভেবেছিলেন, প্রয়োগ করেছিলেন তাঁর কবিতায়। সেজন্যই কবিতাগুলি হয়ে উঠেছে অতুলনীয়, মায়া জড়ানো, এত বছর পরেও।
🌱 এরপর সুনীলবাবু প্রমুখ লেখকদের সম্পর্কে তাঁর অনুভূতি বর্ণনা করে গেছেন সমস্ত গ্রন্থ জুড়ে, করেছেন স্মৃতি রোমন্থন। ‘কবিতা’ পত্রিকার সম্পাদক বুদ্ধদেব বসুর স্নেহ, তাঁর সঙ্গে ঝগড়া-খুনসুটি থেকে শুরু করে, রবীন্দ্রনাথের কবিতা, আবু সয়ীদের আধুনিকতা, প্রিয় সাহিত্যিক বিভূতিভূষণের সুন্দর অনাবিল লেখনী , সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, প্রেমেন্দ্র মিত্র কে নেই সেই আলোচনায়।
🌸 এছাড়াও আছেন, সৈয়দ মুজতবা আলি, রস সাহিত্যের সম্রাট শিবরাম চক্রবর্তী, জগদীশচন্দ্র, সতীনাথ, কমলকুমার, জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী, নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়- যিনি কিনা শুধু অগ্রজ সাহিত্যিক ই ছিলেন না, ছিলেন সুনীলবাবুর শিক্ষকও, সিটি কলেজে পড়ার সুবাদে।
🌱 এখানেই শেষ নয়, কালকূট, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, নজরুল সহ অন্যান্য দের সঙ্গে আবেগঘন মূহুর্ত টুকুও তিনি সযত্নে আমাদের সামনে উপস্থাপিত করেছেন দুই মলাটের মাঝে।
🌷 এক এক সময় মনে হবে, যেন উনি লেখেননি, আমিই সেই সময়ে ভ্রমণ করছি, এত সুন্দর প্রাণবন্ত লেখা। 🩵